ভবদহের জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে যশোরে লাগাতার অবস্থান

0
181

‌‌‌‌‌‘প্রভাবশালী রাজনৈতিকদের ‘টাকা কামানোর মেশিন’ করা হয়েছে ভবদহকে’

নিজস্ব প্রতিবেদক :
ভবদহ পাড়ের মানুষ জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধানের দাবিতে রবিবার দুপুর থেকে যশোর কালেকটরেট চত্বরে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার অসংখ্য নারী-পুরুষ অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে টিআরএম প্রকল্প বাস্তবায়নের এক দফা দাবিতে শ্লোগান দেন এবং বক্তৃতা করেন। দুঃখ দুর্দশার চিত্র তুলে ধরে তারা বহন করেন ব্যানার, প্লাকার্ড।

প্রথমদিন বেলা ১১টা থেকে শুরু করা হয়েছে লাগাতার এ কর্মসূচি। সোমবার থেকে প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে এ কর্মসূচি।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির প্রধান উপদেষ্টা ইকবাল কবির জাহিদ বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়, পানি উন্নয়ন বোর্ড, দুর্বৃত্ত রাজনৈতিক নেতাদের যোগসাজসে ভবদহবাসীকে ডুবিয়ে মারার একের পর এক ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে। আমরা দাবি করছি আমডাঙ্গা খাল প্রশস্থ করে খনন, বিল কপালিয়ায় টিআরএম এবং পর্যায়ক্রমে অন্যান্য বিলে টিআরএম চালু করে নদীর নাব্যতা রক্ষা ও জলাবদ্ধতার অবসান ঘটাতে হবে। একইসাথে উজানে পদ্ম-মাথাভাঙ্গা-ভৈরবের নদী সংযোগের সাথে মুক্তেশ্বরী নদীকে যুক্ত করে প্রবাহমান করতে হাবে। তা হলেই কেবল সমস্যার সমাধান হবে।

ইকবাল কবির জাহিদ আরও বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রভাবশালী রাজনৈতিকদের ‘টাকা কামানোর মেশিন’ করা হয়েছে ভবদহকে। ২০১৩ সাল থেকে প্রতিশ্রুতি ও প্রতিশ্রুতির ভঙ্গের মাধ্যমে জনগণের সাথে অব্যাহত প্রতারণা করা হচ্ছে।

ভবদহ পানি নিষ্কাশন সংগ্রাম কমিটির নেতারা বলেন, এখন চলছে বোরো মৌসুম। কিন্তু জলাবদ্ধতার কারণে ভবদহ এলাকার গ্রামে গ্রামে এখনও পানি জমে আছে। অনেকের উঠানে এখনও কোমর পানি। ফলে শত শত একর জমি এবার আবাদ না হওয়ার শঙ্কায় রয়েছে। ফলে কৃষির উপর নির্ভরশীল এই জনপদের মানুষ আছেন মহাসংকটে।

নেতৃবৃন্দ ভবদহ অঞ্চলকে মহাবিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তাবিত ‘ভবদহ ও তৎসংলগ্ন বিল এলাকার জলাবদ্ধতা দূরীকরণ’ প্রকল্প বাতিলের দাবি করেন। একইসাথে মাঘী পূর্ণিমার আগে বিল কপালিয়া টিআরএম চালুর দাবি জানান।

নেতৃবৃন্দ আরও অভিযোগ করেন, টিআরএম প্রকল্প গ্রহণ না করে ভবদহ সুইচ গেট থেকে প্রায় ৫০-৬০ কিলোমিটার নদী মেরে ফেলা হয়েছে। এক্ষেত্রে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও পানি উন্নয়ন বোর্ড সরকারের নদী বাঁচানোর গৃহীত নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তারা জনগণকে স্থায়ী জলাবদ্ধতায় জিম্মি করে অর্থ লোপাটের স্থায়ী পরিকল্পনা ফেঁদেছে।

কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন ভবদহ পানি নিষ্কাশনের কমিটির উপদেষ্টা অ্যাড. আবুল হোসেন, নাজিমউদ্দিন, তসলিম উর রহমান, হাচিনুর রহমান, অধ্যাপক আফসার আলী, অধ্যাপক আমিরুল আলম খান, আজিজুল হক মনি, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাহমুদ হাসান বুলু, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সম্পাদক দীপঙ্কর দাস রতন প্রমুখ।

এর আগে গত ২ জানুয়ারি এই সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পাঠানো হয়। ঐদিনই দাবি মানা না হলে লাগাতার এই অবস্থান কর্মস‚চি পালনের ঘোষণা দেয়া হয়েছিল।