পাহাড়ে বৈসাবি মেলা শুরু

0
558

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে ১০ ভাষাভাষি ১১টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসাবি। আর এ উৎসবকে ঘিরে বসানো হয়েছে- বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি মেলা।
পাহাড়ের সর্বত্র এখন সাজ সাজ রব। রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে বসেছে হরেক রকম বাহারি পণ্যের স্টল। সবগুলো স্টল ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মাচাঙ ঘরের আদলে তৈরি। বাঁশ আর কাঠ দিয়ে। আর এসব স্টলে স্থান পেয়েছে- চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ম্রো, বম, চাক, পাংখোয়া, লুসাই, খুমী ও খিয়াং নৃ-গোষ্ঠীর ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি, সংষ্কৃতি, খাবার, নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্যাদি বিভিন্ন পণ্য সমগ্রি।
এ মেলাকে আরও আকর্ষণীয় করতে যোগ দিয়েছে অপর দু’পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও ভারতের শিল্পীরা।

বৃহষ্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টায় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের উদ্যোগে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি মেলার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন, সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ও রাঙামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি দীপংকর তালুকদার।
এসময় রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বৃষ কেতু চাকমা, রাঙামাটি সেনা সদর জোনের কমান্ডার লে. কর্নেল রেদুওয়ান ইসলাম, রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদের সদস্য মো. মুছা মাতব্বর উপস্থিত ছিলেন।
মেলা উদ্বোধনের পর মেলা প্রাঙ্গন মাতিয়ে তুলে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রাদয়ের তরুণ-তরুণীরা। তাদের পায়ের নপুরের ছন্দ আর বাঁশির সুরে ছুটে আসে হাজার হাজার দর্শক। মানুষের পাদভারে কানায় কানায় ভরে যায় মেলা প্রাঙ্গন। মেলাকে ঘিরে পাহাড়ি-বাঙালিসহ সব ধর্ম, বর্ণ, জাতি-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সম্প্রীতির মিলন ক্ষেত্র পরিণত হবে। তাছাড়া মেলা চলাকালিন স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
এদিকে মেলা বিজু-সাংগ্রাই-বৈসুক-বিষু-বিহু অর্থাৎ বৈসাবি মেলা উপলক্ষে রাঙামাটি সরকারি কলেজের চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালিটি শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাঙামাটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে মেলা স্থলে মিলিত হয়।
র‌্যালিতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর তরুণ-তরুনীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী সাজে অংশগ্রহণ করেন।
পুরোন বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করতে মুলত এ বৈসাবি উৎসবটিকে সামনে রেখে রাঙামাটিতে ৩দিন ব্যাপী আয়োজন করা হয় বিজু-সাংগ্রাইং-বৈসুক-বিষু মেলা।
এ মেলা তিন দিনব্যাপী চলবে রাঙামাটি, বিভিন্ন ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দল নিজ নিজ ঐতিহ্যবাহী সঙ্গীত ও নৃত্য পরিবেশন করবে। শিশু কিশোরদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, বিভিন্ন খেলাধুলার প্রতিযোগিতা, চাকমা নাটক, পাচন রান্না প্রতিযোগিতাসহ পুরষ্কার বিতরণ, পাহাড়ের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলোর জীবনধারার ওপর আলোকচিত্র প্রদর্শনী। প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে মেলা প্রাঙ্গন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here