মাস্ক না পরায় ছাত্রলীগে নেতাকে ফাঁড়িতে নিয়ে পেটালো পুলিশ

0
453

জেলা প্রতিনিধি, নড়াইল: নড়াইলের শেখখাটি ফাঁড়ি পুলিশের বিরুদ্ধে ছাত্রলীগের সাবেক এক নেতাকে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে। বৃহস্পতিবার সকালে শেখহাটি বাজারে এই ঘটনা ঘটে। আহত তরিকুল ইসলাম মানিক সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। তিনি ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।

আজ শনিবার নড়াইলের পুলিশ সুপারের কাছে এমন অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে আহতের মা লতিফা বেগম দাবি করেন, মস্ক না পরার কারণে তার ছেলেকে পুলিশ এক ঘন্টা আটকে রেখে মারপিট করেছে।

লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, মানিক ঢাকায় আলিবাবা ডোর এন্ড ফার্নিচারের রিজিওনাল ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত। করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নিজ বাড়ি সদর উপজেলার শেখখাটি গ্রামে চলে আসেন। বৃহস্পতিবার সকালে তিরি কাঁচাবাজার করে বাড়িতে ফেরার সময় সাদা পোশাকে শেখখাটি পুলিশ ফাড়ির ইনচার্জ এসআই এনামুল ও অন্যজন কনস্টবল ধাক্কা দিয়ে মাটিতে ফেলে দেন। এরপর তাকে ফাঁড়িতে নিয়ে এসআই এনামুল ও এএসআই আলমগীর ও কয়েক কনস্টবল প্রায় এক ঘন্টা ধরে নির্যাতন করেন। পরে ফাড়ির সহকারি ইনচার্জ আলমগীরসহ তিনপুলিশ মানিককে হ্যান্ডকাপ পরিয়ে নসিমনে সদর থানার ওসির কাছে আনলে তিনি এলাকায় গিয়ে বিষয়টি মিমাংসার কথা বলে ছেড়ে দেন।

অভিযোগে বলা হয়, দুপুর একটার দিকে মানিক সদর হাসপাতালের ইর্মাজেন্সি বিভাগে চিকিৎসা করাতে যান। বিষয়টি এএসআই আলমগীর জানতে পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে ‘তোর চিকিৎসার প্রয়োজন নেই’ বলে মানিকের ভাই রতনের কাছ থেকে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশান এবং মানিক নিয়ে যান। রাত ৮টার দিকে মানিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে আ্যাম্বুলেন্সে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তরিকুল ইসলাম মানিক জানান, ফাঁড়ির পুলিশ একজনের মাধ্যমে প্রস্তাব দিয়েছিল বিষয়টি টাকা দিয়ে মিমাংসা করতে। আমি কোনো অন্যায় করিনি বিধায় কোনো আপোষে যাইনি। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি জানান।

শেখখাটি বাজার কমিটির সভাপতি মনিরুল ইসলাম সরদার বলেন, পুলিশ মানিকের মাস্ক না থাকার অভিযোগে প্রায় এক ঘন্টা ধরে বেধড়ক মারপিট করে। আমরা বাজার কমিটির লোকজন পুলিশের হাত-পা ধরলেও তারা কোনো কথা শোনেনি।

এ ব্যাপারে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি চঞ্চল শাহরিয়ার মিম বলেন, শেখখাটি এলাকায় ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠার পেছনে তার অনেক ভূমিকা রয়েছে। এ ঘটনা দোষিদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

অভিযুক্ত শেখখাটি ফাঁড়ি ইনচার্জ এনামুল বলেন, সরকারি নির্দেশ মোতাবেক আমরা ডিউটি পালন করছিলাম। তার মাস্ক পরা ছিল না। তাকে এসব বিষয়ে পশ্ন করা হলে সে পুলিশের সাথে বেয়াদবি করে। তাকে মারা হয়নি। সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। তিনি টাকার বিনিময়ে মিমাংসার বিষয়টি অস্বীকার করেন। এএসআই আলমগীর মানিককে চিকিৎসা নিতে বাঁধা দিয়েছে বিষয়টি ঠিক নয় বলে জানান।

নড়াইল পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি কিছুটা ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নেয়া হচ্ছে।