মেসার্স শামসুর রহমান ও সুজন এন্টারপ্রাইজের মত অসাধু ব্যবসায়ীদের কারনেই বেনাপোলে হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি

0
392

ডি এইচ দিলসান : টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট মেসার্স শামসুর রহমান ও সুজন এন্টারপ্রাইজের মত অসাধু ব্যবসায়ীদের কারনে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর বেনাপোলে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি হচ্ছে বলে দাবি করেছেন সিএন্ড এফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষ নেতারা। সুত্রে জানা যায় ২০১৯-২০ অর্থ বছরের প্রথম ছয় মাসের জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা রাজস্ব কম আদায় হয়েছে। যার মধ্যে প্রায় হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ফাখি দিয়েছে মেসার্স শামসুর রহমান ও সুজন এন্টারপ্রাইজ। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের শীর্ষ এক নেতা বলেন শুল্ক গোয়েন্দা শাখা মাত্র ৪০ টা লট নিয়ে তদন্ত করেছে এমন প্রায় ১ হাজার লট আছে যে গুলোর মধ্যে ঘাপলা রয়েছে। তিনি বলেন খুব শিঘ্রই সেগুলোও মিডিয়ার সামনে চলে আসবে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল সিএন্ড এফ এজেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি স্বজন রহমান বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতি মানে দেশের উন্নয়নেল অন্তরায়। আর যারা মিথ্যা ঘোষনা দিয়ে মোটর সাইকেল আমদানির নামে সরকারের ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন তারা অবশ্যয় অন্যায় করেছেন। তিনি বলেন কাস্টমস কর্তৃপক্ষ তাদেরকে শোকজ করেছে, তারা কি ব্যাখ্যা দেন সেটা দেখার বিষয়।
অতিরিক্ত কমিশনার ড. নিয়ামুল ইসলাম বলেন, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর আমাদেরকে জানানোর পর আমরা টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড ও বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স শামসুর রহমান এবং সুজন এন্টারপ্রাইজকে শোকজ করেছি, তারা ব্যাখ্যা দিলে তার পর আমরা ব্যবস্থা নিবো।
বেনাপোল কাস্টমস সুত্রে জানা যায়, বিগত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বেনাপোল বন্দরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫ হাজার ৪৮৩ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছিল ৪ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এসময় ঘাটতি ছিল ১ হাজার ৪৪৩ কোটি টাকা। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ২৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই- ডিসেম্বর) বেনাপোল কাস্টম হাউসে রাজস্ব ঘাটতি হয়েছে ১ হাজার ৩৬৫ কোটি টাকা। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। এর মধ্যে জুলাই মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৫৩ কোটি ৮০ লাখ, আগস্ট মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০৬ কোটি ২৯ লাখ, সেপ্টেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০৫ কোটি ১০ লাখ, অক্টোবর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪২৮ কোটি ৩১ লাখ, নভেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩৩ কোটি ৯২ লাখ টাকা, ডিসেম্বর মাসে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪৮৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা। এর বিপরীতে গত ছয় মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ হাজার ৫৪৭ কোটি টাকা। প্রথম ছয় মাসে রাজস্ব ঘাটতি ১ হাজার ৩৬৫কোটি টাকা।
উল্লেখ্য বেনাপোল কাস্টম হাউসে মিথ্যা ঘোষনা দিয়ে মোটর সাইকেল আমদানির নামে সরকারের ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছেন টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড ও বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট কেন্দ্রীয় সিএন্ডএফ এজেন্ট এ্যাসসিয়েশনের মহাসচিব শামসুর রহমান। এদিকে আরো একশ’ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে । কেন্দ্রীয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। একই সাথে এ ঘটনার সাথে জড়িত টিভিএস অটো বাংলাদেশ লিমিটেড ও বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট মেসার্স শামসুর রহমান এবং সুজন এন্টারপ্রাইজকে শোকজ করেছে বেনাপোল কাস্টস হাউজ। ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত কমিশনার ড. নিয়ামুল ইসলাম।