যশোর উপশহর শহীদ স্মরনী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক মাত্র মাঠ বে দখলের প্রতিবাদে কমলমতি শিশু ও এলাকাবাসীর মানববন্ধন

0
901

এম আর রকি : যশোর শহরতলী উপশহরস্থ ১৩৬ নং শহীদ স্মরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ দখল মুক্তর দাবিতে কমলমতি শিশু শিক্ষার্থীদের সাথে দলমত নির্বিশেষে স্থানীয় এলাকার নারীপুরুষ ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা মানববন্ধনে মিলিত হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় বিদ্যালয়ের সামনে পশ্চিম পাশের ঢাকা-মাগুরা মহাসড়কে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ গ্রহনকারী ওই স্কুলের শিক্ষার্থীদের মুখে একটি দাবি স্কুলের মাঠ দখলমুক্ত করতে তারা দেশের প্রধানমন্ত্রীর আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
মানব বন্ধনে অংশ নেওয়া নারী পুরুষেরা জানান, শিক্ষার মানউন্নয়নে দেশের প্রতিটা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো উন্নয়ন.বিনা বেতনে লেখাপড়া করানো,বিনামূল্যে ১০০% বই দেয়া, উপবৃত্তি দেয়া, শিশুদের বিস্কুট দেয়া ইত্যাদি কার্যক্রম সরকারি অর্থায়নে চলমান রয়েছে। শিশুদের শারীরিক,মানসিক ও নান্দনিক বিকাশে একটি খেলার মাঠের কোন বিকল্প নেই। এ জন্য প্রতিটা বিদ্যালয়ে একটি বড় খেলার মাঠের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন বর্তমান সরকারের শিক্ষা বিভাগগুলো। তারা আরো বলেন, ১৯৭০ সালে যশোর হাউজিং এস্টেটের ৭নং সেক্টরের এইচ ব্লকের ১নং হতে ১৮ নং প্লটের উপর স্থানীয় জনগনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা ও উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয় ১৩৬ নং শহীদ স্মরনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া,বিদ্যালয়ে শিশুদের দৈনিক সমাবেশ ও খেলাধুলাসহ স্থানীয়রা ঈদের নামাজ আদায় করেন। কিন্তু জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ১৯৭৮ সালের ৮ এপ্রিল ১ নম্বর প্লটটি হাসিনা বেগম নামক এক নারী কে বরাদ্ধ দেন । যার স্মারক নং-৪৫৬/এইচ,ই তাং-০৮/০৪/১৯৭৮। ও ২নং প্লটটি সাহেব আলী পিতা মোবারক আলীর নামে বরাদ্ধ দেন । যার স্মারক নং ১১৭/এইচ,ই, তারিখ ২৬/০২/১৯৭৯ ইং। এরপর ১৯৮৪ সালে বিদ্যালয়টি সরকারিকরণ হওয়ার পর বিদ্যালয়ের সামনের ১ ও ২ নম্বর প্লটটি বরাদ্দ পাওয়ার জন্য আবেদন করা হয়। তৎকালীন বিদ্যালয়ের সভাপতি অ্যাড. রফিউদ্দিন এ আবেদন করেন ঢাকার জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ ও যশোর জেলা প্রশাসক অফিসে। এর প্রেক্ষিতে ১৯৮৯ সালের ৩১ মার্চ জাতীয় গৃহায়নের খুলনার নির্বাহী প্রকৌশলী এবং রাজশাহীর গৃহায়নের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও তৎকালীন যশোর জেলা প্রশাসক বিদ্যালয় পরিদর্শনে আসেন। তারা প্লটটি মালিককে দু’টি প্লটের পরিবর্তে যশোর হাউজিং এস্টেটের অধীনে নতুন প্লটের বরাদ্দের আশ্বাস দেন। ওই সময় সংসদ সদস্য আব্দুল হাই বিদ্যালয় পরিদর্শন করে জেলা প্রশাসককে বিদ্যালয়ের পক্ষে প্লট দুটি বরাদ্দ দেয়ার সুপারিশ করেন। পরবর্তীতে ১৯৮৯ সালের ১৫ আগস্ট তৎকালীন বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও মনিরুজ্জামান ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রবিউল আলমের মধ্যস্থতায় প্লটের মালিক ও বিদ্যালয় র্কর্তৃপক্ষের সাথে আপোশ নামায় স্বাক্ষর করা হয়। কিন্তু ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি প্লটের মালিক হাসিনা বেগম প্লটটি জহুরুল হককে যাবতীয় কার্য পরিচালনার দায়িত্ব দেনয়। পরবর্তীতে জহুরুল হক প্লটটি এনামুল হক নামে এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দেন। ওই সালে প্লটের মালিক তার প্লটের নির্মাণ কাজ শুরু করলে স্থানীয় জনগণের বাধায় কাজ বন্ধ করে দেন। ওই সময় সংসদ সদস্য খালেদুর রহমান টিটো উপজেলা চেয়ারম্যান শাহীন চাকলাদারসহ স্থানীয় চেয়ারম্যান বিদ্যালয়ের নামে প্লট বরাদ্দ দেয়ার সুপারিশ করেন হাউজিং কর্তৃৃপক্ষকে। এরপরও বিদ্যালয়ের সামনে বিদ্যালয়ের এসেম্বেলী ও মেধা বিকাশের একমাত্র মাঠ দখল হয়ে যাওয়ায় ফুঁসে উঠে এলাকাবাসী।
মানববন্ধনে বিদ্যালয়ের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আফজাল হোসেন দোদুল, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল খালেক আওয়ামীলীগ নেতা সুখেন মজুমদার, ৭ নম্বর সেক্টরের মেম্বর হাসান জহির, যুবলীগ নেতা মুনসুর আলম, প্রাক্তন ছাত্র হাবিবুর রহমান বাবুল, প্রধান শিক্ষক শাহাজাদ হোসেন বাবু, এলাকাবাসীর পক্ষে রফিকুল ইসলাম মিলন, নিয়ামত উল্লাহ, জাবের হোসেন জাহিদ, মোস্তাফিজুর রহমান কবির, রকিব মোস্তফাসহ বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here