যশোর পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের স্বাক্ষর ও পদবি জালিয়াতি ফাঁস

0
590

মাগুরার শ্রীপুরে জাং ছাং ইন্ডাষ্ট্রিজ এন্ড ট্রেড লিমিটেড ছাড়পত্র সৃষ্টি করে কার্বন পাউডার তৈরীর অভিযোগ
এম আর রকি : যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদা ও সিনিয়র কেমিস্ট মিজানুর রহমানের স্বাক্ষর জালিয়াতির মাধ্যমে সম্পূর্ণ ভূয়া পরিবেশগত ছাড়পত্র সৃষ্টি করার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনাটি যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের অধীনে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামে। প্রতিষ্ঠানের নাম জাং ছাং ইন্ডাস্ট্রিজ এন্ড ট্রেড লিমিটেড। এখানে পাটকাঠি থেকে কার্বন পাউডার তৈরী করা হয়। প্রতিষ্ঠানের মালিক চাইনিজ নাগরিক জাং হুই ছাং। উক্ত প্রতিষ্ঠানের ভূয়া পরিবেশগত ছাড়পত্র দুই পাতার ফটোকপি জব্দ করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। উক্ত প্রতিষ্ঠান দেখাশুনা করেন ঢাকা ধামড়াই কান্টাহাটি টুকের বাড়ি বদরুল আলমের ছেলে আলমগীর হোসেন বলে জনশ্রুতি রয়েছেন। এ ব্যাপারে ফৌজদারি আইনে মামলার প্রস্তুতি গ্রহন করা হচ্ছে।
যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের উপ-পরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদা জানান,অত্র অধিদপ্তরের অধীনে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল উত্তর গোবিন্দপুর গ্রামে একটি চাইনিজ নাগিরকের পরিচালনায় একটি প্রতিষ্ঠানে পাটকাঠি থেকে কার্বন পাউডার প্রস্তুতের জন্য ছাড়পত্র গ্রহন করা হয়। উক্ত প্রতিষ্ঠানের ছাড়পত্র ভূয়া ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে সৃষ্টি করা খবর পেয়ে গত ২ জানুয়ারী যশোর পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের একটি টিম উক্ত প্রতিষ্ঠানে হাজির হন। সেখানে তারা পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয়ের ছাড়পত্র দেখতে চান। উক্ত প্রতিষ্ঠান বর্তমানে দেখাশুনা ও পরিচালনাকারী আলমগীর হোসেন পরিবেশ অধিদপ্তর ঢাকা বন মন্ত্রনালয় স্মারক নং ২২.০২.৪০৪১.০১৬.৭২.০০২.১৮.৭০২ তারিখ ১২/০৩/১৮ পরিবেশগত ছাড়পত্রের ফটোকপি দেখতে দেন। উক্ত স্মারকে ছাড়পত্র দু’টি দেখে উপ-পরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদাসহ সহকর্মীরা হতবাক হয়ে পড়েন। তারা উক্ত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ওই দিন দুপুর ১২ টা ৪০ মিনিটে ফটোকপি দুইটি ছাড়পত্র জব্দ করেন। উক্ত জব্দ তালিকায় প্রতিষ্ঠান দেখাশুনা ও পরিচালনাকারী আলমগীর হোসেন ছাড়াও স্থানীয় শ্রীপুর উপজেলার নাকোল গ্রামের শাহিদুল শেখের ছেলে রাশেদুল শেখ ও প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট ঢাকা ধামড়াই কান্টাহাটি টুকের বাড়ী এলাকার শুকুর আলীর ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের স্বাক্ষর রয়েছে। জব্দকৃত দুইটি ফটোকপি পরিবেশগত ছাড়পত্র দেখে জানাগেছে,ছাড়পত্র দু’টিতে মাগুরা জেলার শালিখা উপজেলার নাকোল উত্তর গোবিন্দপুর লেখা রয়েছে। তাছাড়া,ছাড়পত্রের প্রথমটিতে সিনিয়র কেমিস্ট হিসেবে মোঃ নাজমুল হুদা লেখার উপর স্বাক্ষর রয়েছে। তারিখ রয়েছে ১৪/০৩/১৮। অথচ উপ-পরিচালক শেখ মোঃ নাজমুল হুদা ২৭/০৫/১৮ ইং তারিখ হতে অত্র কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন শুরু করেন। এর আগে তিনি চট্টগ্রাম জেলায় কর্মরত ছিলেন।তাছাড়া তিনি সিনিয়র কেমিষ্ট নন। এমনকি যে স্বাক্ষর রয়েছে সে স্বাক্ষর তার নয় বলে তিনি দাবি করেন। অপর ছাড়পত্রে একই স্মারকে একই তারিখ উল্লেখসহ সিনিয়র কেমিস্ট মজিবুর রহমান রহমান লেখা রয়েছে। অথচ উক্ত কার্যালয়ে বিগত ১০ সাল থেকে মজিবুর রহমান নামে কোন কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করেননি। যা কর্মকর্তাদের বোর্ড দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে। সিনিয়র কেমিস্ট হিসেবে মিজানুর রহমান দায়িত্ব পালন করছেন ২৭/০৮/১৭ ইং থেকে। পরিবেশ অধিদপ্তর যশোর কার্যালয়ে পরিবেশগত যে ছাড়পত্র প্রদান করা হয় তা অবস্থানগত ছাড়পত্র। তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে। সেক্ষেত্রে উক্ত প্রতিষ্ঠানে দু’টি ছাড়পত্র সম্পূর্ন ভূয়া ও জালজালিয়াতি বলে কর্মকর্তাদ্বয় জানিয়েছেন। অবিলম্বে উক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে পরিবেশ অধিদপ্তর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here