১৯ বছরেও বিচার হয়নি যশোরের দৈনিক রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল হত্যাকান্ডের

0
509

বিশেষ প্রতিনিধি : যশোরে চাঞ্চল্যকর দৈনিক রানার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুল হত্যাকান্ডের ১৯ বছর পার হলেও এ মামলার বিচারকার্য শেষ হয়নি। দীর্ঘ সময়ে নানা জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতার মধ্যে দিয়ে এগিয়েছে মামলার কার্যক্রম। ১৯ বছর যাবত অধরাই রয়ে গেল খুনীরা। হত্যাকান্ডের বিচার চাইতে চাইতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছে নিহতর পরিবার ও স্বজনেরা ।
তবে অচিরেই প্রতিবন্ধকতা দূর করে মামলা সচল করা সম্ভব হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর রফিকুল ইসলাম পিটু। তিনি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, শিগগিরই এ মামলার শুনানী শুরু হবে। এরপরই রায়ের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি হবে।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাত আনুমানিক সোয়া ১০ টার পর রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুল শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার অদূরে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন তিনি। পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন অজ্ঞাতনামা নামা ঘাতক উল্লেখ করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের তৎকালীন এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। একপর্যায়ে আইনি জটিলতার কারণে মামলার কার্যক্রম থমকে পড়ে। আর এ কারণে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেয়া হয়।দীর্ঘদিন পর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ থেকে মুকুল হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দু’জনের নাম অর্ন্তভুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেন।
২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জগঠন করা হয়। এ সময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে।
আদালত সূত্র জানায়, মুকুল হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি ইত্তেফাকের সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করেন। তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ায় ফের মুকুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত ফারাজী আজমল হোসেনের অংশ বাদ রেখে ফের বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর রফিকুল ইসলাম পিটু জানান, মুকুল হত্যা মামলার বিচারকাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুতই মুকুল হত্যার বিচার পাওয়া যাবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।এদিকে নানা কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে যশোরে পালিত হয়েছে দৈনিক রানার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুলের ১৯তম মৃত্যু বার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে বুধবার সকালে কালোব্যজ ধারন, শোকর‌্যালি , শহীদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে প্রেসক্লাব যশোর, সংবাদপত্র পরিষদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন, সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর, যশোর জেলা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। পরে প্রেসক্লাব যশোরে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here